মুখোমুখি সাবেক দুই প্রতিমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদ গণফোরামে যোগ দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এর আগে তিনি পাবনা-১ আসনে (সাঁথিয়া ও বেড়ার একাংশ) আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ নির্বাচন করার জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে বর্তমান সাংসদ ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। শেষ পর্যন্ত টুকুই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান।
এদিকে সাইয়িদের গণফোরামে যোগ দেওয়া নিয়ে পাবনা-১ আসনে শুরু হয়েছে নানা জল্পনাকল্পনা। অনেকেরই ধারণা, এ আসনে তাঁকে ধানের শীষ প্রতীক দিয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী করা হচ্ছে। আর এমনটা হলে শামসুল হক টুকুর প্রধান প্রতদ্বন্দ্বী হবেন সাইয়িদই। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল হক টুকুর বিরুদ্ধে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেন। ওই নির্বাচনে সাইয়িদ হেরে যান।
এদিকে ভোটের হিসাবে পাবনা-১ আসনে বিএনপির প্রচুর ভোট থাকলেও এখানে জামায়াতের অবস্থান বেশ মজবুত। মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর নির্বাচনী এলাকা এটি। ১৯৯১ সালে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে এবং ২০০১ সালে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে তিনি এখান থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। আবার ১৯৯৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু সাইয়িদ এবং ২০০৮ সালে শামসুল হক টুকুর কাছে পরাজিত হন। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোট বজায় থাকলে এ আসনে জামায়াতের প্রার্থীকেই বিএনপি ছাড় দেবে বলে জামায়াত নেতাদের ধারণা। এ আসনে বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুল বাসেত খানকে ইতিমধ্যেই জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি এবারও এ আসন জামায়াতকে ছেড়ে দিতে পারে বলে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
এদিকে মতিউর রহমান নিজামী না থাকায় বিএনপি চাচ্ছিল এবার তাদের প্রার্থীই যেন এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। বিএনপির অন্তত ছয়জন মনোনয়নপ্রত্যাশী জোর চেষ্টা চালিয়েছেন এ আসনে প্রার্থী হতে।
এমন অবস্থায় আবু সাইয়িদের গণফোরামে যোগ দেওয়ার বিষয়টিকে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিন দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেই আলোচনা। এখানে আবু সাইয়িদকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী করা হলে বিএনপি ও জামায়াতের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়েও চলছে আলোচনা।
এ ব্যাপারে আবু সাইয়িদের মুঠোফোনে বারবার ফোন দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর একাধিক ঘনিষ্ঠ সমর্থকের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলা হলে তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বেড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রইজউদ্দিন বলেন, ‘সাইয়িদ সাহেবের গণফোরামে যোগ দেওয়ার খবর শুনেছি। তিনিই পাবনা-১ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হচ্ছেন বলে আমরা দলীয় উচ্চপর্যায় থেকে শুনেছি।’
বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির ও জামায়াত ঘোষিত প্রার্থী আবদুল বাসেত খান বলেন, ‘টিভি স্ক্রলে সাইয়িদ সাহেবের ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচন করার বিষয়টি দেখেছি। এ ব্যাপারে আমার সংগঠন যে সিদ্ধান্ত নেবে, তাই আমি মেনে নেব।’
No comments:
Post a Comment