Sunday, December 9, 2018

সৌম্য না লিটন, কে থাকছেন একাদশে?

সৌম্য না লিটন, কে থাকছেন একাদশে?

মধুর এক সমস্যায় পড়েছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। চার ওপেনারের তিনজনকে খেলানো হবে প্রথম তিন পজিশনে। তাহলে বাদ পড়ছেন কে?
বিকেলে ব্যাটিং অনুশীলনের পর সন্ধ্যায় ফ্লাড লাইটের আলোয় ফিল্ডিং অনুশীলন করল বাংলাদেশ। মাশরাফি-তামিম-সাকিবরা ফিল্ডিং অনুশীলন করলেন হাতে পাতলা দস্তানা পরে। ম্যাচের আগের দিন ফিল্ডিং অনুশীলন করতে গিয়ে হাতে ব্যথা-ট্যাথা যেন না লাগে, সে কারণেই এই সুরক্ষা।
দলের চার ওপেনারের মধ্যে তিনজনের হাতে দস্তানা দেখা গেলেও সৌম্য সরকার ফিল্ডিং করলেন খালি হাতে। কাল ম্যাচ খেলতে হবে না বলেই কি সতর্কতা অবলম্বন খুব বেশি জরুরি মনে করলেন না বাঁহাতি ওপেনার? অবশ্য কে দস্তানা পরে অনুশীলন করলেন আর কে করলেন না, এটা দেখে একাদশের ধারণা পাওয়া শুধু কঠিনই নয়, হাস্যকরও মনে হতে পারে। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্র যা জানাচ্ছে, তাতে এটিকে প্রতীকী ছবিও বলতে পারেন।

এ মধুর সমস্যাটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের পর থেকেই। তামিম ইকবাল তো থাকবেনই। ওপেনিংয়ে তাঁর সঙ্গী কে? এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পরও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, বাকি দুজনের জায়গা হবে কোথায়? তামিম যদি 'অটোমেটিক চয়েস' হন, বাকি তিন ওপেনারের মধ্যে ভীষণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। প্রতি ম্যাচের আগেই বাংলাদেশ দলের একাদশ নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট চেষ্টা করেন একটা রহস্যের জাল বিছিয়ে রাখতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও সেটি থাকছে। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রে যেটি শোনা যাচ্ছে, তামিমের সঙ্গে ওপেন করতে পারেন ইমরুল কায়েস। চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে তিনে খেলতে দেখা গিয়েছিল সৌম্যকে। কাল সেটি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তিনে লিটন দাসের নামার সম্ভাবনাই বেশি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ডান হাতি বোলারের আধিক্য থাকায় টানা তিন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে খেলাতে চায় না টিম ম্যানেজমেন্ট। সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বিন মুর্তজাও বলেছেন, ‘এখানে সমন্বয়ের ব্যাপার আছে। ওপেনিংয়ে ইমরুল শেষ তিনটা ম্যাচেই প্রায় সেঞ্চুরি করেছে। দুটি সেঞ্চুরি, একটা বড় হাফ সেঞ্চুরি আছে। ডানহাতি-বাঁ হাতি কম্বিনেশনটা জরুরি কতটুকু, এটাও দেখতে হবে।’
ওপেনিংয়ে তামিম-ইমরুল, তিনে লিটন খেললে সৌম্যর একাদশে জায়গা পাওয়াই কঠিন। মাশরাফি অবশ্য এও বললেন, ‘সৌম্য (এশিয়া কাপের) ফাইনালে সাত নম্বরে নেমে দারুণ ব্যাটিং করেছে। বিশ্বকাপের কথা ভেবে আমরা এমন কিছু করতেও পারি।’
টেস্টে স্পিনারদের ওপর পূর্ণ আস্থা থাকলেও ওয়ানডে এলেই বদলে যায় ছবি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে বোলিং আক্রমণে পেসারদের ওপর অগাধ আস্থা টিম ম্যানেজমেন্টের। কাল ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে যে তিন পেসার খেলাতে চান, মাশরাফি সেটি সংবাদ সম্মেলনেই নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু মাশরাফি ও মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে তৃতীয় পেসারটা কে? মাশরাফির কথায় মনে হবে এশিয়া কাপের পর তিন মাস বিরতিতে আবার ওয়ানডেতে ফেরা হচ্ছে রুবেল হোসেনের, ‘রুবেল অসাধারণ। সবার চেয়ে দুর্দান্ত। এশিয়া কাপে সেরা বোলার ছিল। রুবেল যেন তার সেরা জায়গা থেকে পিছিয়ে না যায়।’
খেলাটা যেহেতু শুরু হবে দুপুরে, শেষ মুহূর্তে যদি টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় বদল আসে, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

Saturday, December 8, 2018

অধিনায়কের ২০০তম ম্যাচ রাঙাতে চায় বাংলাদেশ


অধিনায়কের ২০০তম ম্যাচ রাঙাতে চায় বাংলাদেশ
আজকের আগে বাংলাদেশ ১১৬ ওয়ানডেতে জয় পেয়েছে। আজ জিতলে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ১১৭। তবে একটা দিক দিয়ে আজকের ম্যাচটা হতে পারে শুধুই মাশরাফির। ওয়ানডেতে নিজের ২০০ তম ম্যাচ খেলতে নামবেন আজ, বাংলাদেশের হয়ে যে রেকর্ড নেই আর কারও।
শীতের দিবারাত্রি ম্যাচ মানে আলোচনায় ‘শিশির’ শব্দটির অবধারিত উপস্থিতি। শিশিরের টানে চলে আসে আরও অনেক কিছু। টস, উইকেট, ফিল্ডিং, একাদশ, বলের গ্রিপ ইত্যাদি। টেস্ট সিরিজটা দোর্দণ্ড প্রতাপে জিতেও আজ শুরু ওয়ানডে সিরিজের আগে এই শব্দমালাকে এড়িয়ে যেতে পারছে না বাংলাদেশ।
দুপুরে অনুশীলন শুরুর আগে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার সংবাদ সম্মেলনেও আসে শিশিরের আলোচনা। শিশিরের সম্ভাব্য প্রভাবের কথা এড়িয়ে না গেলেও গত বিপিএলের অভিজ্ঞতায় মাশরাফির ধারণা, মিরপুরে এটি সব সময় সমান প্রভাব ফেলে না। কোনো দিন শিশির অনেক বেশি পড়ে, কোনো দিন কম। কাজেই তাঁর কাছে টস জয় মানেই শিশির-আতঙ্কে আগে বোলিং-ফিল্ডিং করতে নেমে যাওয়া নয়। মিরপুরের উইকেটে আগে ব্যাটিং করাটাকেই আদর্শ মানেন অধিনায়ক। সে ক্ষেত্রে প্রার্থনা থাকবে, সন্ধ্যার পর শিশিরটা যেন কম পড়ে।শিশিরের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই কাল বাংলাদেশ দলের অনুশীলন দুপুরে শুরু হয়ে গড়াল সন্ধ্যারও অনেক পরে। এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও প্রেসবক্স থেকে দেখা যাচ্ছিল শিশিরমাখা বলে ফিল্ডিং অনুশীলন। কেউ ক্যাচ নিচ্ছেন, কেউ থ্রো করছেন। ক্যাচ নিতে গিয়ে অবশ্য বেশির ভাগই পিছলে গেছে খেলোয়াড়দের হাত থেকে। এর আগে হয়েছে টার্গেট ঠিক করে বোলিং অনুশীলন। তারও আগে বিকেলে তামিম ইকবালকে দেখা গেল ইনডোরের নেট থেকে এসে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সবুজ মাঠে ছক্কা মারার অনুশীলন করছেন, যেটি তিনি আরেক দিন কিছুটা করে নিয়েছেন বিকেএসপির অনুশীলন ম্যাচের সেঞ্চুরির ইনিংসেও।

প্রার্থনা কাজে লাগলে ভালো, না লাগলে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। কাজেই একাদশ ঠিক করার কাজ পুরোপুরি শিশির-তত্ত্বের ওপর নির্ভর করছে না। নিজেদের শক্তির জায়গার সঙ্গে ভাবনায় থাকছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্বলতার অংশটিও। অধিনায়ক মাশরাফিই কাল জানিয়েছেন, প্রথম ওয়ানডেটা তাঁরা খেলবেন তিন পেসার নিয়ে। মাশরাফি ও মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে রুবেল হোসেনের সম্ভাবনাই বেশি। ব্যাটিং সামর্থ্যের কথা চিন্তা করে কোচ স্টিভ রোডস অবশ্য তৃতীয় পেসার হিসেবে চেয়েছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে। কিন্তু মাশরাফির ভোটটা যে রুবেলের বাক্সে ছিল, সেটি বোঝা গেছে সংবাদ সম্মেলনেই, ‘রুবেল জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে শারীরিক অসুস্থতা থেকে উঠে এসেছিল। সে সুযোগটা সাইফউদ্দিন খুব ভালো কাজে লাগিয়েছে। তবে আমি মনে করি, রুবেল অসাধারণ। সবার থেকে অসাধারণ। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে রুবেল যেন তার সেরা জায়গা থেকে পিছিয়ে না যায়।’
একাদশ ঠিক করায় সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল, চোট থেকে ফেরা তামিমের ওপেনিং সঙ্গী কে হবেন? শেষ পর্যন্ত সুযোগটা পাচ্ছেন সম্ভবত জিম্বাবুয়ে সিরিজে দুর্দান্ত ব্যাট করা ইমরুল কায়েস। টপ অর্ডারে ডানহাতি-বাঁহাতি ভারসাম্য রাখতে লিটন দাস খেলবেন তিনে। প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি পেলেও সৌম্য সরকারকে তাই প্রথম ম্যাচটা মাঠের বাইরেই কাটাতে হবে। চার, পাঁচ ও ছয়ের সম্ভাব্য ক্রম মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। এরপর মোহাম্মদ মিঠুন। তিন পেসারের বাইরে বিশেষজ্ঞ স্পিনার সাকিব ও মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রয়োজনে হাত ঘোরাবেন মাহমুদউল্লাহও।
মিরপুরের উইকেটে ২৫০-২৬০ রানকেই জেতার জন্য যথেষ্ট মনে হয় মাশরাফির কাছে। তবে শর্ত, বোলিং শক্তিকে জ্বলে উঠতে হবে স্বমহিমায়। টেস্টে শুধু স্পিনারদের কাছেই সে প্রত্যাশা ছিল, এবার চাওয়াটা পেসারদের কাছেও। অধিনায়কের আশা, মিরপুরের উইকেটে পেসাররা সে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং সামর্থ্যের কথাও ভুলছেন না। ক্যারিবীয় ব্যাটিং মানেই তো ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা! সবকিছু নিজেদের অনুকূলে থাকার পরও তাই ‘ফেবারিট’ শব্দটার ওপর একক দাবি রাখেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আজকের আগে বাংলাদেশ ১১৬ ওয়ানডেতে জয় পেয়েছে। আজ জিতলে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ১১৭। তবে একটা দিক দিয়ে আজকের ম্যাচটা হতে পারে শুধুই মাশরাফির। ওয়ানডেতে নিজের ২০০ তম ম্যাচ খেলতে নামবেন আজ, বাংলাদেশের হয়ে যে রেকর্ড নেই আর কারও। জাতীয় দলের হয়ে কোনো একটি সংস্করণে ২০০ ম্যাচ খেলতে পারা মাশরাফির চোখেও একটা অর্জন। তবে রেকর্ডের এ রকম সংখ্যা কখনোই তাঁকে টানে না। ২০০ তম ম্যাচটা মাশরাফির কাছে তখনই বিশেষ কিছু হয়ে উঠবে, যখন তাতে জিতবে বাংলাদেশ।

ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, দলে পাঁচ পরিবর্তন

ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, দলে পাঁচ পরিবর্তন

মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
মিরপুরে বছরের শেষ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ। তিন পেসার ও চার ওপেনার নিয়ে মাঠে নেমেছে মাশরাফি বিন মুতর্জার দল। দলে মোট পাঁচটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। চোট কাটিয়ে ওয়ানডে দলে ফিরেছেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। চোটের জন্য এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ছিলেন না দুজন। সেই সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে বিশ্রাম পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজও ফিরেছেন ওয়ানডে দলে। এ ছাড়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের জায়গায় দলে ফিরেছেন পেসার রুবেল হোসেন। এই পাঁচজনকে জায়গা দিতে দল থেকে বাদ পড়েছেন আরিফুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, নাজমুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও আবু হায়দার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এর আগে টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সর্বশেষ তিনটি ওয়ানডে সিরিজের দুটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ।

প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), মোস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন।

Tuesday, December 4, 2018

র‍্যাব-পুলিশ ঢুকে দেখে কাফনে মোড়ানো শিশুর লাশ



র‍্যাব-পুলিশ ঢুকে দেখে কাফনে মোড়ানো শিশুর লাশ


রাজধানীর বাংলামোটরের লিংক রোডের খোদেজা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উল্টো দিকের ১৬ নম্বর বাড়ির ভেতরে ঢুকে এক শিশুর লাশ দেখতে পেয়েছে র‍্যাব ও পুলিশ। আজ বুধবার সকালে ওই বাসায় এক বাবা তাঁর দুই শিশুসন্তানকে ‘জিম্মি’ করে রেখেছেন—এমন সংবাদে বাসাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ। কিছুক্ষণ পরে র‍্যাব, পুলিশ, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যেরা বাড়িটি ঘিরে ফেলেন। পুলিশ ও র‍্যাব ভেতরে ঢুকে ওই শিশুর লাশ দেখতে পেয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে।
শিশুটির নাম নূর সাফায়েত। তাঁর বয়স আনুমানিক আড়াই বছর।
র‍্যাব-২–এর এসআই শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বাড়ির ভেতরে ঢুকেছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি শিশুটির বাবা বসে আছেন, তাঁর পাশে একজন হুজুর বসে আছেন। শিশুটিকে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো একটি টেবিলের ওপর রাখা হয়েছে। শিশুটির বাবাকে কোনো সাহায্য লাগবে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপনাদের কারও সাহায্য লাগবে না। আপনারা কেন এসেছেন? আপনারা চলে যান। বেলা একটার দিকে আমি নিজে আজিমপুর কবরস্থানে গিয়ে আমার ছেলেকে দাফন করব।”’

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘ওই বাসায় একটি শিশু মারা গেছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। শিশুটির বয়স আড়াই থেকে তিন বছর।’ তিনি জানান, শিশুর বাবা এর আগে মাদক গ্রহণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জেলেও পাঠানো হয়।
শিশুটির বাবার নাম নুরুজ্জামান কাজল। কাজলের বাবার নাম মনু মেম্বার। পরিবারের সদস্যেরা জানান, এলাকায় বেশ সুনাম রয়েছে মনু মেম্বারের পরিবারের। কাজলের আচার-আচরণের জন্য পরিবারের সদস্যরা তাঁর ওপর বিরক্ত ছিলেন।

স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ওই বাসার দোতলায় থাকতেন কাজল। পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, তাঁর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মাস খানেক আগে তাঁর স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।
স্থানীয় একজন বাসিন্দা আকিল জামান বলেন, কয়েক মাস আগে স্ত্রীকেও মারধর করেন কাজল। প্রতিবেশীরা এসে তাঁর স্ত্রীকে উদ্ধার করেন। নির্যাতন সইতে না পেরে স্ত্রী চলে গেছেন। বাচ্চা দুটো বাবার সঙ্গে ছিল।
ঘটনা শুনে নুরুজ্জামান কাজলের ভাই নুরুল হুদা উজ্জ্বল ঘটনাস্থলে এসেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে সাতটার দিকে কাজল বাসা থেকে বের হয়ে পাশে থাকা মাদ্রাসায় গিয়ে জানান, তাঁর ছোট ছেলে নূর সাফায়েত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। এটা যেন মাইকে ঘোষণা করা হয়। তারপর মাদ্রাসার ছাত্রদের পবিত্র কোরআন খতম দেওয়ার জন্য নিয়ে যেতে চান। এ কথা শোনার পর আবদুল গাফফার নামে একজন খাদেম মাদ্রাসা থেকে তাঁর সঙ্গে যান। এখনো তিনি ভেতরে আটকা আছেন। মাইকে সংবাদ শুনে আমি আসি। ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করি। কিন্তু কাজল ঢুকতে দেননি। দরজা আটকে দিয়েছেন। কাজলের সঙ্গে তাঁর বড় ছেলে সুরায়েত (৪) আছে।’

নুরুল হুদা উজ্জ্বল অভিযোগ করেন, তাঁর ভাই নুরুজ্জামান কাজল দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলেকে হত্যা করেছেন। তাঁর হাতে রামদা ছিল।
বাড়িটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও র‍্যাব। ছবি: আবদুস সালামবাড়িটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও র‍্যাব। ছবি: আবদুস সালাম

হতাশ গ্রিজম্যান


ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে কোর্টনি ওয়ালশের পরিকল্পনা

ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে কোর্টনি ওয়ালশের পরিকল্পনা
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ১৮ বছরে বাংলাদেশের খেলা ১১২টি টেস্ট ম্যাচের মধ্যে প্রথমবার রবিবার ঢাকা টেস্টে প্রতিপক্ষকে ফলোঅনের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে টাইগাররা। এদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের পর মিরপুর টেস্টে আরও ভয়ঙ্কর রূপে নিজেদের মেলে ধরে টাইগাররা।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৫০৮ রানের জবাবে মেহেদি হাসান মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১১১ রানেই অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে অবাক করে ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশ দলে একজনও পেসার ছিলেন না।
তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া ওয়ানডে সিরিজে পেসারদের আধিক্য থাকবে বলে জানিয়েছেন পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ। মাশরাফি বিন মর্তুজা অধিনায়ক হিসেবে থাকবেন। রুবেল হোসেন আছেন। আছেন মুস্তাফিজুর রহমানও।
এ ব্যাপারে সোমবার কোর্টনি ওয়ালশ বলেন, ‘মাশরাফি ও রুবেল ফিরছে। মুস্তাফিজ আছে। স্কোয়াডে যথেষ্ট পেসার আছে। তবে আমি জানি না কে কে খেলবে। এটা নির্ভর করবে উইকেটের উপর। আসলে আপনারা ম্যাচ ও সিরিজ জিততে চান। আমি মনে করি বাংলাদেশ যদি বেশি বেশি ম্যাচ জিতে তাহলে তরুণদের ক্রিকেটে আসার পথ আরও প্রসারিত হবে। সামনে আমাদের অনেক ম্যাচ আছে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে পেসাররা খেলবে। তরুণরা সেটা দেখবে। তারা ক্রিকেটের প্রতি আকৃষ্ট হবে। এটা আসলে একটা প্রোগ্রাম, যেটার মাধ্যমে আপনি তরুণদের উজ্জীবিত করতে পারবেন খেলতে। এটাকে কেবল একটি টেস্ট ম্যাচ যেটাতে কোনো পেসার খেলেনি সেটা দিয়ে বিচার করলে হবে না।’

আবারও তেজস্ক্রিয় পদার্থ শনাক্ত!



আবারও তেজস্ক্রিয় পদার্থ শনাক্ত!

.চট্টগ্রাম বন্দর
.তিন ধাপে পরীক্ষা করে লোহার পণ্যে তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতি নিশ্চিত হন বিজ্ঞানীরা। 
.চট্টগ্রাম বন্দরে এ পণ্য এনেছে কেএসআরএম গ্রুপ। 
.লোহার মধ্যে পাওয়া তেজস্ক্রিয় মৌলটি হলো ‘সিজিয়াম ১৩৭’ 
.সর্বোচ্চ মাত্রা পাওয়া গেছে প্রতি ঘণ্টায় ১ দশমিক ২৩ মাইক্রোসিভার্ট
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া পুরোনো লোহার পণ্যে আবারও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া গেছে। এই পুরোনো লোহা আনা হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলি থেকে। চট্টগ্রামের কেএসআরএম গ্রুপ এই লোহা আমদানি করেছে।তিন ধাপে পরীক্ষা করে কনটেইনারের ভেতরে তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
পরীক্ষা ও জরিপে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কনটেইনারে লোহার মধ্যে পাওয়া তেজস্ক্রিয় মৌলটি হলো ‘সিজিয়াম ১৩৭’। শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত হওয়া তেজস্ক্রিয় পদার্থ এটি। কনটেইনারের বাইরে থেকে পরীক্ষা করে এটির সর্বোচ্চ মাত্রা পাওয়া গেছে প্রতি ঘণ্টায় ১ দশমিক ২৩ মাইক্রোসিভার্ট (তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপের একক)। তেজস্ক্রিয় পদার্থটি কনটেইনার থেকে বের করা হয়নি। ফলে এটির প্রকৃত মাত্রা নিরূপণ করা যায়নি।
শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় পদার্থ হলো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষতিকর পদার্থ। এটি সরাসরি মানুষের সংস্পর্শে এলে বা গলিয়ে কোনো পণ্য প্রস্তুত করে ব্যবহার করা হলে মানবস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতো বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।  
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের ভ্যালেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এই পুরোনো লোহার টুকরা আমদানি করে চট্টগ্রামের কেএসআরএম গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কেএসআরএম বিলেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। তবে সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠানটি এই পুরোনো লোহা এনেছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলি থেকে। গত ২০ সেপ্টেম্বর চালানটি খালাস নেওয়ার সময় বন্দরের সিপিআর ফটকে মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের ‘রেডিয়েশন পোর্টাল মনিটর’ স্থাপনায় সংকেত বেজে ওঠে। এরপরই কনটেইনারটি আটক করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। একই চালানে আরও নয়টি কনটেইনার থাকলেও সেগুলোতে কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া যায়নি। কনটেইনারটি আটকের পর দ্বিতীয় ধাপে এটি পরীক্ষা করা হয়। ১০ নভেম্বর কনটেইনারটিতে তৃতীয় ধাপে জরিপ চালানো হয়। পরমাণু শক্তি কমিশনের ছয় সদস্যের একটি পরিদর্শক দল জরিপ করে কনটেইনারের ভেতর তেজস্ক্রিয় পদার্থের স্থানটি চিহ্নিত করে।
জানতে চাইলে পরিদর্শক দলের প্রধান বিজ্ঞানী খন্দকার আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তেজস্ক্রিয় পরিমাপের যন্ত্র জরিপ মিটার, কন্টামিনেশন মনিটরসহ কয়েকটি যন্ত্রের মাধ্যমে কনটেইনারের বাইরে থেকে এই জরিপ করা হয়। কনটেইনারের যে জায়গায় তেজস্ক্রিয় পদার্থ আছে, তা চিহ্নিত করার পর সেখানে স্টিকার সেঁটে দেওয়া হয়েছে।
পরিদর্শক দলের নেতৃত্ব দেওয়া খন্দকার আসাদুজ্জামান সাভারের ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির হেলথ ফিজিকস অ্যান্ড রেডিওঅ্যাকটিভ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। জরিপের সময় তাঁর সঙ্গে পরমাণু শক্তি কমিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল ইসলাম ভূঞাসহ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ইতিমধ্যে পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিশ্চিত হওয়ার পর এই কনটেইনারের গন্তব্য কী, জানতে চাইলে চট্টগ্রামে কাস্টমসের সহকারী কমিশনার (মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ) মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তৃতীয় ধাপের জরিপ করা হলেও জরিপের ফল এখনো হাতে পাওয়া যায়নি। ফলাফল পাওয়ার পর আমদানি পণ্যের চালানটি কি পুনঃ রপ্তানি হবে, না দূষণমুক্ত করা হবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এই কাঁচামাল কোনোভাবেই গ্রহণ করবেন না। কারণ, রপ্তানিকারক তেজস্ক্রিয়তামুক্ত পণ্য সরবরাহের অঙ্গীকার করেছেন।  
প্রথম তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া যায় ২০১৪ সালে
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রপ্তানি হওয়া কনটেইনারে প্রথম তেজস্ক্রিয় পদার্থ শনাক্ত হয় ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল।  এরপর ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট চীনে রপ্তানি হওয়ার সময় জিংক অক্সাইডের একটি চালানে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হয়।