Monday, December 3, 2018

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীরও সম্পদ বেড়েছে

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীরও সম্পদ বেড়েছে

এবার যানবাহনের ধরন উল্লেখ না করে এর আর্থিক মূল্য দেখিয়েছেন ১ কোটি ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৪৭৭ টাকা।
গত পাঁচ বছরে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেকের শুধু নিজেরই নয়, তাঁর স্ত্রীরও সম্পদ বেড়েছে। পাঁচ বছর আগে জাহিদ মালেকের যে পরিমাণ ঋণ ছিল, তা–ও তিনি পরিশোধ করেছেন।


২০১৪ সালের দশম এবং এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হলফনামায় জাহিদ মালেক সম্পদের যে বিবরণ দিয়েছেন, তা বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পাওয়া গেছে। জাহিদ মালেক মানিকগঞ্জ-৩ (সাটুরিয়া উপজেলা ও সদরের সাতটি ইউনিয়ন) আসনের আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদ।



এবারের হলফনামায় জাহিদ মালেকের ব্যবসা থেকে ২৬ লাখ ৯৬ হাজার ৬০০ টাকা এবং সাংসদ হিসেবে সম্মানী ভাতা ২৯ লাখ ৮১ হাজার ৫৮০ টাকা উল্লেখ করলেও গতবারের হলফনামায় এসব খাতে তাঁর কোনো আয় ছিল না। এবার তাঁর বার্ষিক আয় বেড়েছে ১০ লাখ ২৬ হাজার ৭১ টাকা।



গতবারের হলফনামায় বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট বা দোকান ভাড়া বাবদ ১ কোটি ৫৩ লাখ ২৯ হাজার ৩২ টাকা, শেয়ার বা ব্যাংক আমানত বাবদ ৪১ লাখ ৯৮ হাজার ১০৮ টাকা এবং চাকরি থেকে ১৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা বার্ষিক আয় ছিল জাহিদ মালেকের। এবারের হলফনামা অনুযায়ী বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট বা দোকান ভাড়া বাবদ তাঁর বার্ষিক আয় ১ কোটি ৩৮ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৪ টাকা। ব্যবসা থেকে আয় ২৬ লাখ ৯৬ হাজার ৬০০ টাকা। শেয়ার বা ব্যাংক আমানত বাবদ আয় ২৫ লাখ ৬৬ হাজার ১৮৭ টাকা।

এবার ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিপুল পরিমাণ টাকা জমা করেছেন জাহিদ মালেক। গতবার আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁর জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৩৮ লাখ ৬৫ হাজার ৯৬৯ টাকা। এবার এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪৯ হাজার ২০ টাকা। গতবার ঋণপত্র বা শেয়ারের মূল্য ১৩ কোটি ৫৮ লাখ ৮৬ হাজার ৯৩৪ টাকা দেখিয়েছিলেন। এবার তা বেড়ে হয়েছে ২৬ কোটি ৪০ লাখ ৯৭ হাজার ২৯৫ টাকা, যা আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এ ছাড়া গতবার ৬০ লাখ টাকা মূল্যমানের একটি জিপ দেখিয়েছিলেন তিনি। এবার যানবাহনের ধরন উল্লেখ না করে এর আর্থিক মূল্য দেখিয়েছেন ১ কোটি ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৪৭৭ টাকা। গতবারের হলফনামায় ইলেকট্রনিকসামগ্রীর বিবরণীর ছকে কোনো কিছুর উল্লেখ ছিল না, এবারও নেই।
এ বিষয়ে জানতে গতকাল সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেকের মুঠোফোনে কল করা তাঁর সহকারী ব্যক্তিগত সচিব (এপিএস) সেলিম হোসেন বলেন, তিনি (স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী) ব্যস্ত আছেন।
গতবারের ও এবারের হলফনামা অনুযায়ী প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেকের স্থাবর সম্পদ অপরিবর্তিত রয়েছে। যৌথ মালিকানায় কৃষিজমি ৪০ বিঘা, জাহিদ মালেকের নিজের নামে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৪২ হাজার মূল্যমানের অকৃষিজমি, জমিসহ একটি ১৬তলা ভবনের ১১টি তলা নিজের নামে এবং স্ত্রীর নামে ৭৫ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর নিজের নামে ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ ও ৩৭ শতাংশের দুটি বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।
বেড়েছে স্ত্রীর সম্পদও
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী শাবানা মালেকেরও সম্পদ বেড়েছে। গতবারের হলফনামায় শাবানা মালেকের ঋণপত্র বা শেয়ারের আর্থিক মূল্য ছিল ১ কোটি ৪৭ লাখ ৩১ হাজার ৫২০ টাকা। এবার তা বেড়ে ৩ কোটি ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা হয়েছে। এই হিসাবে এবার ঋণপত্র বা শেয়ারের মূল্য বেড়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৬১ হাজার ৯৮০ টাকা। এ ছাড়া গতবার শাবানা মালেকের কোনো স্বর্ণ না থাকলেও এবার ৫৫ ভরি স্বর্ণ দেখানো হয়েছে। এর অর্থমূল্য ৪ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। এই হিসাবে গত পাঁচ বছরে শাবানা মালেকের ১ কোটি ৬৩ লাখ ৬১ হাজার ৯৮০ টাকার সম্পদ বেড়েছে।

এদিকে গতবার জাহিদ মালেকের ৯২ লাখ ১৫ হাজার ৬৬২ টাকার ঋণ থাকলেও ইতিমধ্যে তা পরিশোধ করেছেন বলে এবারের হলফনামা থেকে জানা গেছে। ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থী হারুনার রশিদ খানকে হারিয়ে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন জাহিদ মালেক। এরপর ২০১৪ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনরায় সাংসদ নির্বাচিত হলে তাঁকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়।

No comments:

Post a Comment