Monday, December 3, 2018

ভারত দলকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিলেন চ্যাপেল


ভারত দলকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিলেন চ্যাপেল
সৌরভ গাঙ্গুলীকে ভারতীয় দলে ব্রাত্য বানিয়ে দিয়েছিলেন গ্রেগ চ্যাপেল। পরে ফিরলেও সেই প্রতাপশালী গাঙ্গুলীর দেখা আর মেলেনি। তাই গ্রেগ চ্যাপেলের ব্যাপারে কটুবাক্য শুনলেই কলকাতার ‘দাদা’র কথাই মাথায় আসে। কিন্তু গাঙ্গুলী নন, চ্যাপেল সম্পর্কে নতুন করে ঝাল ঝেড়েছেন ভিভিএস লক্ষ্মণ।
ব্যাটসম্যান গ্রেগ চ্যাপেল? শ্রদ্ধেয়, পূজনীয়। কিন্তু কোচ গ্রেগ? উঁহু, ঠিক পাতে তোলা যায় না।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ককে নিয়ে এমন কথা শোনা যাওয়া মানেই মনের মধ্যে একজন ক্রিকেটারের নাম চলে আসা। তিনি সৌরভ গাঙ্গুলী। একজন অধিনায়কের আত্মবিশ্বাস চূর্ণ করে কীভাবে দল থেকেই ছিটকে ফেলা যায়, সেটা দেখিয়েছেন গ্রেগ চ্যাপেল। গাঙ্গুলীকে ভারতীয় দলে ব্রাত্য বানিয়ে দিয়েছিলেন এই কোচ। পরে ফিরলেও সেই প্রতাপশালী গাঙ্গুলীর দেখা আর মেলেনি। তাই গ্রেগ চ্যাপেলের ব্যাপারে কটুবাক্য শুনলেই কলকাতার ‘দাদা’র কথাই মাথায় আসে। 

না, গাঙ্গুলী নন, চ্যাপেল সম্পর্কে নতুন করে ঝাল ঝেড়েছেন ভিভিএস লক্ষ্মণ। নান্দনিক এই সাবেক ব্যাটসম্যান আত্মজীবনী নিয়ে হাজির হয়েছেন এবার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইতিহাসের জন্ম দেওয়া ইডেনের সে কাব্যিক ইনিংসকে টেনে এনেই আত্মজীবনীর নাম দিয়েছেন, ‘২৮১ ও তার পর’। শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ, রাহুল দ্রাবিড় ও বীরেন্দর শেবাগদের দিয়ে মোড়ক উন্মোচন করিয়েছেন লক্ষ্মণ। আত্মজীবনীতেই লক্ষ্মণ দাবি করেছেন, ভারতীয় দলকে ধ্বংসস্তূপ বানিয়ে গেছেন গ্রেগ। এ কারণেই কোচ গ্রেগ কখনো তাঁর সম্মান পাবেন না।

আত্মজীবনীতে লক্ষ্মণ জানিয়েছেন, ‘কোচের কিছু প্রিয় খেলোয়াড় ছিল। তাদের খেয়াল রাখত কোচ। বাকিদের দিকে ফিরেও তাকাতেন না, তাদের নিজেদের খেয়াল নিজেদের রাখতে হতো। দলটা চোখের সামনে শেষ হয়ে গেল। গ্রেগের পুরো সময়টাই ছিল তিক্ততায় ভরা। সে ছিল নিজের সিদ্ধান্তে কঠোর ও অনমনীয়। একটি জাতীয় দল কীভাবে চালাতে হয়, সেটা জানত না। সে ভুলেই গিয়েছিল ক্রিকেটাররা ম্যাচ খেলে, তারাই তারকা, কোচ নন।’
২০০৫ সালের মে মাস থেকে ২০০৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের দায়িত্বে ছিলেন চ্যাপেল। এ সময়ে শুধু গাঙ্গুলী নন, লক্ষ্মণও ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময়টা পার করেছেন, ‘গ্রেগ সমর্থন ও শুভকামনার মধ্য দিয়েই ভারতে এসেছিল। কিন্তু সে দলটাকে একদম ধ্বংস করে গেছে। আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময় সৃষ্টিতে তাঁর ভূমিকা রেখেছে। মাঠের ফলাফলে মনে হতে পারে, তার পদ্ধতি হয়তো মাঝেমধ্যে কাজ করে কিন্তু আমাদের সেসব ফলে কোচের কোনো ভূমিকা ছিল না।’
শুধু ক্রিকেটীয় দিক থেকেই নয়, গ্রেগ চ্যাপেলের সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন লক্ষ্মণ, ‘তার আচরণ ছিল রূঢ় এবং সাংঘর্ষিক। সে যা ভাবত, সেটিকেই ঠিক ভাবত, এবং এ ব্যাপারে অনড় ছিল। মানুষ সামলানোর কোনো ক্ষমতাই ছিল না। সে খুব দ্রুত অসন্তুষ্টির বীজ বুনেছিল, দলটা খুব দ্রুত বদলে গেল। আমি সব সময় ব্যাটসম্যান গ্রেগ চ্যাপেলকে শ্রদ্ধা করব, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোচ গ্রেগ চ্যাপেলের ব্যাপারে এমন কিছু বলতে পারব না।’
কোচ গ্রেগকে নিয়ে বইয়ে যা লিখেছেন, তাতে শ্রদ্ধা শব্দটা কোনোভাবেই মাথায় আসেও না।

No comments:

Post a Comment