মিরপুরে এক টেস্টে দুই প্রাপ্তি
যখন টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ সেশনের খেলা চলার কথা, মিরপুর স্টেডিয়াম তখন ভাঙা হাট। প্যাড-ট্যাড পরে ব্যাট হাতে হন্তদন্ত হয়ে মাঠে ঢুকছেন তামিম ইকবাল।
পাশের একাডেমি মাঠের নেটে অনেকক্ষণ ব্যাটিং করেছেন। চোটের কারণে অনেক দিন দলের বাইরে থাকা ওপেনারের মাঠে ফেরার প্রস্তুতি। টেস্টের তৃতীয় দিন বিকেলেই মিরপুরের মাঝ উইকেটে ব্যাটিং করার সুযোগ এসে যাবে, এটা তাঁর কল্পনা করারও কথা নয়।
কল্পনাতীত সেই ঘটনাটা তামিমকে আনন্দে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে, সেটিই স্বাভাবিক। তা ‘আনন্দ’ দিয়ে কি সবটা বোঝানো যায়? সেটি ছাপিয়ে বোধ হয় প্রতিশোধ নেওয়ার তৃপ্তি। নইলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ড্রেসিংরুমের দিকে ইঙ্গিত করে তামিম কেন বলবেন, ‘ওদের কেমন লাগছে, আমি তা খুব ভালো বুঝতে পারছি। কারণ, কিছুদিন আগে আমারও এমনই লেগেছিল।’
প্রথমে ব্যাটিং করে ফেললে আর ফলো অনের ভয় থাকে না। এ কারণেই ফলো অন করতে বাধ্য হওয়ার যে শর্ত-প্রথম ইনিংসে ২০০ বা এর বেশি রানে পিছিয়ে থাকা-সেটির পরও ৩১ বার বাংলাদেশের গায়ে লাগেনি ফলো অনের কলঙ্ক।
ইনিংস পরাজয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের পরিচয় তো ফলো অনের চেয়েও নিবিড় ছিল। ৩৮টি টেস্টে দুবার ব্যাটিং করেও প্রতিপক্ষের প্রথম ইনিংসের রান ছুঁতে পারেনি বাংলাদেশ।
একদা পরাক্রান্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনেক দিনই রাজ্যপাট হারানো এক রাজা। সোনালি অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করে দীর্ঘশ্বাস ফেলাই যার নিয়তি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের অধোযাত্রা বোধ হয় তলানি ছুঁয়ে ফেলল এই সিরিজে। অনুমিতভাবেই যেটিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের ‘সবচেয়ে কালো অধ্যায়’ বলে রায় দিয়ে দিয়েছে সে দেশের সংবাদমাধ্যম। বাংলাদেশের তাতে কী আসে যায়! প্রতিপক্ষকে ফলো অন করিয়ে ইনিংস ব্যবধানে জেতার প্রথম কীর্তিটা যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই হলো, ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে সেটি বরং অবধারিত ছিল বলে মনে হতেই পারে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের অনেকগুলো ‘প্রথম’-এর সঙ্গে যে জড়িয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নাম!
আসুন, একটা তালিকা করে ফেলি-
প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার?
-ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সেন্ট লুসিয়া, ২০০৪)।
টেস্টের দুই ইনিংসেই ডিক্লেয়ার?
-ওয়েস্ট ইন্ডিজ (চট্টগ্রাম, ২০১১)
No comments:
Post a Comment