Monday, December 3, 2018

২০২২ পর্যন্ত সুযোগ পেলেন জামাল



২০২২ পর্যন্ত সুযোগ পেলেন জামাল

বাংলাদেশি বিজ্ঞানী সৈয়দ জামাল আহমেদ ২০২২ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় বসবাসের সুযোগ পেয়েছেন। তবে তিনি স্থায়ীভাবে দেশটিতে বসবাস করতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত জানাবেন দেশটির আদালত।
জামাল আহমেদকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে কি না, এ-সংক্রান্ত মামলার প্রথম শুনানি হয় ২৭ নভেম্বর। এ সময় মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের কানসাস শহরের অভিবাসন আদালতের বিচারক গ্লেন বেকার বলেন, জামালকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে কি না, বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখবেন তিনি। তাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল।
আমেরিকায় বসবাসের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত জানুয়ারিতে কানসাসের লরেন্সের বাসা থেকে জামালকে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তা বাহিনী। সে সময় জামালকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন জামাল ও তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ২০২২ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় বসবাসের সুযোগ পেলেন জামাল।

এ বছরের জানুয়ারিতে জামাল ও তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা প্রশাসনের নেওয়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন। ওই মাসে মার্কিন প্রশাসন জামালকে আমেরিকা থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল ছিল। প্রশাসন এমনকি তাঁকে বাংলাদেশগামী একটি উড়োজাহাজে তুলেও দেয়। কিন্তু আদালতের নির্দেশে হাওয়াই দ্বীপে উড়োজাহাজ জরুরি অবতরণ করিয়ে জামালকে ফিরিয়ে আনা হয় আবার আমেরিকায়। জামাল আমেরিকায় থাকার জন্য দুই পদ্ধতিতে আবেদন করেন। তিনি তাঁকে বিতাড়নের লক্ষ্যে প্রশাসনের গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিল ও আশ্রয় প্রার্থনা করে আবেদন করেন।
আমেরিকার আইন অনুযায়ী, আমেরিকায় কমপক্ষে ১০ বছর অবস্থান করছেন এমন অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বিতাড়নের আদেশ এলে তা বাতিল চেয়ে করা আবেদন অনুমোদন হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে আবেদনকারীর কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকা যাবে না। আর আশ্রয় প্রার্থনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিজ দেশে বিদ্যমান ঝুঁকির প্রমাণ হাজির করতে হয়। ২৯ নভেম্বর এ-সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারক পরবর্তী শুনানির দিন ২০২২ সালে ধার্য করায়, জামাল আহমেদ একটি দীর্ঘ সময় পেলেন। এই সময়ের মধ্যে জামাল আহমেদ দুটি উপায়েই আবেদন করার প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
একই দিনে শুনানি হয় জামাল আহমেদের স্ত্রী অ্যাঞ্জেলা জয়নাব চৌধুরীর মামলা নিয়েও। এই বাংলাদেশিও একই ধরনের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত থেকে মুক্তি চান।
জামাল আহমেদের আইনজীবী রেখা শর্মা-ক্রফোর্ড বলেন, পরবর্তী শুনানির তারিখ বিলম্বিত হওয়ার পেছনে অভিবাসন আইনে হওয়া সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলো দায়ী। অভিবাসন আইনে হওয়া পরিবর্তনের কারণে আদালতে মামলাজট তৈরি হয়েছে। এতে আনন্দিত বা হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এই আদেশের কারণে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে দেরি হবে। এই মামলায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে জামালকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেওয়া অভিবাসন বিচারকের রায় বহাল থাকবে কি থাকবে না। ওই রায় বহাল থাকলে বিতাড়নের সিদ্ধান্ত বাতিলের আবেদন খারিজ হয়ে যাবে।
কানাসাস সিটির কলেজের শিক্ষক ও গবেষক জামাল আহমেদ ১৯৮৭ সালে বৈধভাবে আমেরিকায় এসেছিলেন। তিনি কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। কিন্তু তিনি দুবার ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও আমেরিকায় অবস্থান করেন। আর এই অভিযোগেই তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে এমএসএন নিউজকে জামাল বলেছেন, ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি লরেন্সেই থাকবেন। আগের মতোই শিক্ষকতা ও গবেষণাতেই থাকবে তাঁর পূর্ণ মনোযোগ।

No comments:

Post a Comment