Sunday, December 9, 2018

সৌম্য না লিটন, কে থাকছেন একাদশে?

সৌম্য না লিটন, কে থাকছেন একাদশে?

মধুর এক সমস্যায় পড়েছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। চার ওপেনারের তিনজনকে খেলানো হবে প্রথম তিন পজিশনে। তাহলে বাদ পড়ছেন কে?
বিকেলে ব্যাটিং অনুশীলনের পর সন্ধ্যায় ফ্লাড লাইটের আলোয় ফিল্ডিং অনুশীলন করল বাংলাদেশ। মাশরাফি-তামিম-সাকিবরা ফিল্ডিং অনুশীলন করলেন হাতে পাতলা দস্তানা পরে। ম্যাচের আগের দিন ফিল্ডিং অনুশীলন করতে গিয়ে হাতে ব্যথা-ট্যাথা যেন না লাগে, সে কারণেই এই সুরক্ষা।
দলের চার ওপেনারের মধ্যে তিনজনের হাতে দস্তানা দেখা গেলেও সৌম্য সরকার ফিল্ডিং করলেন খালি হাতে। কাল ম্যাচ খেলতে হবে না বলেই কি সতর্কতা অবলম্বন খুব বেশি জরুরি মনে করলেন না বাঁহাতি ওপেনার? অবশ্য কে দস্তানা পরে অনুশীলন করলেন আর কে করলেন না, এটা দেখে একাদশের ধারণা পাওয়া শুধু কঠিনই নয়, হাস্যকরও মনে হতে পারে। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্র যা জানাচ্ছে, তাতে এটিকে প্রতীকী ছবিও বলতে পারেন।

এ মধুর সমস্যাটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের পর থেকেই। তামিম ইকবাল তো থাকবেনই। ওপেনিংয়ে তাঁর সঙ্গী কে? এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পরও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, বাকি দুজনের জায়গা হবে কোথায়? তামিম যদি 'অটোমেটিক চয়েস' হন, বাকি তিন ওপেনারের মধ্যে ভীষণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। প্রতি ম্যাচের আগেই বাংলাদেশ দলের একাদশ নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট চেষ্টা করেন একটা রহস্যের জাল বিছিয়ে রাখতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও সেটি থাকছে। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রে যেটি শোনা যাচ্ছে, তামিমের সঙ্গে ওপেন করতে পারেন ইমরুল কায়েস। চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে তিনে খেলতে দেখা গিয়েছিল সৌম্যকে। কাল সেটি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তিনে লিটন দাসের নামার সম্ভাবনাই বেশি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ডান হাতি বোলারের আধিক্য থাকায় টানা তিন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে খেলাতে চায় না টিম ম্যানেজমেন্ট। সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বিন মুর্তজাও বলেছেন, ‘এখানে সমন্বয়ের ব্যাপার আছে। ওপেনিংয়ে ইমরুল শেষ তিনটা ম্যাচেই প্রায় সেঞ্চুরি করেছে। দুটি সেঞ্চুরি, একটা বড় হাফ সেঞ্চুরি আছে। ডানহাতি-বাঁ হাতি কম্বিনেশনটা জরুরি কতটুকু, এটাও দেখতে হবে।’
ওপেনিংয়ে তামিম-ইমরুল, তিনে লিটন খেললে সৌম্যর একাদশে জায়গা পাওয়াই কঠিন। মাশরাফি অবশ্য এও বললেন, ‘সৌম্য (এশিয়া কাপের) ফাইনালে সাত নম্বরে নেমে দারুণ ব্যাটিং করেছে। বিশ্বকাপের কথা ভেবে আমরা এমন কিছু করতেও পারি।’
টেস্টে স্পিনারদের ওপর পূর্ণ আস্থা থাকলেও ওয়ানডে এলেই বদলে যায় ছবি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে বোলিং আক্রমণে পেসারদের ওপর অগাধ আস্থা টিম ম্যানেজমেন্টের। কাল ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে যে তিন পেসার খেলাতে চান, মাশরাফি সেটি সংবাদ সম্মেলনেই নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু মাশরাফি ও মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে তৃতীয় পেসারটা কে? মাশরাফির কথায় মনে হবে এশিয়া কাপের পর তিন মাস বিরতিতে আবার ওয়ানডেতে ফেরা হচ্ছে রুবেল হোসেনের, ‘রুবেল অসাধারণ। সবার চেয়ে দুর্দান্ত। এশিয়া কাপে সেরা বোলার ছিল। রুবেল যেন তার সেরা জায়গা থেকে পিছিয়ে না যায়।’
খেলাটা যেহেতু শুরু হবে দুপুরে, শেষ মুহূর্তে যদি টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় বদল আসে, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

Saturday, December 8, 2018

অধিনায়কের ২০০তম ম্যাচ রাঙাতে চায় বাংলাদেশ


অধিনায়কের ২০০তম ম্যাচ রাঙাতে চায় বাংলাদেশ
আজকের আগে বাংলাদেশ ১১৬ ওয়ানডেতে জয় পেয়েছে। আজ জিতলে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ১১৭। তবে একটা দিক দিয়ে আজকের ম্যাচটা হতে পারে শুধুই মাশরাফির। ওয়ানডেতে নিজের ২০০ তম ম্যাচ খেলতে নামবেন আজ, বাংলাদেশের হয়ে যে রেকর্ড নেই আর কারও।
শীতের দিবারাত্রি ম্যাচ মানে আলোচনায় ‘শিশির’ শব্দটির অবধারিত উপস্থিতি। শিশিরের টানে চলে আসে আরও অনেক কিছু। টস, উইকেট, ফিল্ডিং, একাদশ, বলের গ্রিপ ইত্যাদি। টেস্ট সিরিজটা দোর্দণ্ড প্রতাপে জিতেও আজ শুরু ওয়ানডে সিরিজের আগে এই শব্দমালাকে এড়িয়ে যেতে পারছে না বাংলাদেশ।
দুপুরে অনুশীলন শুরুর আগে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার সংবাদ সম্মেলনেও আসে শিশিরের আলোচনা। শিশিরের সম্ভাব্য প্রভাবের কথা এড়িয়ে না গেলেও গত বিপিএলের অভিজ্ঞতায় মাশরাফির ধারণা, মিরপুরে এটি সব সময় সমান প্রভাব ফেলে না। কোনো দিন শিশির অনেক বেশি পড়ে, কোনো দিন কম। কাজেই তাঁর কাছে টস জয় মানেই শিশির-আতঙ্কে আগে বোলিং-ফিল্ডিং করতে নেমে যাওয়া নয়। মিরপুরের উইকেটে আগে ব্যাটিং করাটাকেই আদর্শ মানেন অধিনায়ক। সে ক্ষেত্রে প্রার্থনা থাকবে, সন্ধ্যার পর শিশিরটা যেন কম পড়ে।শিশিরের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই কাল বাংলাদেশ দলের অনুশীলন দুপুরে শুরু হয়ে গড়াল সন্ধ্যারও অনেক পরে। এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও প্রেসবক্স থেকে দেখা যাচ্ছিল শিশিরমাখা বলে ফিল্ডিং অনুশীলন। কেউ ক্যাচ নিচ্ছেন, কেউ থ্রো করছেন। ক্যাচ নিতে গিয়ে অবশ্য বেশির ভাগই পিছলে গেছে খেলোয়াড়দের হাত থেকে। এর আগে হয়েছে টার্গেট ঠিক করে বোলিং অনুশীলন। তারও আগে বিকেলে তামিম ইকবালকে দেখা গেল ইনডোরের নেট থেকে এসে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সবুজ মাঠে ছক্কা মারার অনুশীলন করছেন, যেটি তিনি আরেক দিন কিছুটা করে নিয়েছেন বিকেএসপির অনুশীলন ম্যাচের সেঞ্চুরির ইনিংসেও।

প্রার্থনা কাজে লাগলে ভালো, না লাগলে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। কাজেই একাদশ ঠিক করার কাজ পুরোপুরি শিশির-তত্ত্বের ওপর নির্ভর করছে না। নিজেদের শক্তির জায়গার সঙ্গে ভাবনায় থাকছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্বলতার অংশটিও। অধিনায়ক মাশরাফিই কাল জানিয়েছেন, প্রথম ওয়ানডেটা তাঁরা খেলবেন তিন পেসার নিয়ে। মাশরাফি ও মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে রুবেল হোসেনের সম্ভাবনাই বেশি। ব্যাটিং সামর্থ্যের কথা চিন্তা করে কোচ স্টিভ রোডস অবশ্য তৃতীয় পেসার হিসেবে চেয়েছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে। কিন্তু মাশরাফির ভোটটা যে রুবেলের বাক্সে ছিল, সেটি বোঝা গেছে সংবাদ সম্মেলনেই, ‘রুবেল জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে শারীরিক অসুস্থতা থেকে উঠে এসেছিল। সে সুযোগটা সাইফউদ্দিন খুব ভালো কাজে লাগিয়েছে। তবে আমি মনে করি, রুবেল অসাধারণ। সবার থেকে অসাধারণ। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে রুবেল যেন তার সেরা জায়গা থেকে পিছিয়ে না যায়।’
একাদশ ঠিক করায় সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল, চোট থেকে ফেরা তামিমের ওপেনিং সঙ্গী কে হবেন? শেষ পর্যন্ত সুযোগটা পাচ্ছেন সম্ভবত জিম্বাবুয়ে সিরিজে দুর্দান্ত ব্যাট করা ইমরুল কায়েস। টপ অর্ডারে ডানহাতি-বাঁহাতি ভারসাম্য রাখতে লিটন দাস খেলবেন তিনে। প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি পেলেও সৌম্য সরকারকে তাই প্রথম ম্যাচটা মাঠের বাইরেই কাটাতে হবে। চার, পাঁচ ও ছয়ের সম্ভাব্য ক্রম মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। এরপর মোহাম্মদ মিঠুন। তিন পেসারের বাইরে বিশেষজ্ঞ স্পিনার সাকিব ও মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রয়োজনে হাত ঘোরাবেন মাহমুদউল্লাহও।
মিরপুরের উইকেটে ২৫০-২৬০ রানকেই জেতার জন্য যথেষ্ট মনে হয় মাশরাফির কাছে। তবে শর্ত, বোলিং শক্তিকে জ্বলে উঠতে হবে স্বমহিমায়। টেস্টে শুধু স্পিনারদের কাছেই সে প্রত্যাশা ছিল, এবার চাওয়াটা পেসারদের কাছেও। অধিনায়কের আশা, মিরপুরের উইকেটে পেসাররা সে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং সামর্থ্যের কথাও ভুলছেন না। ক্যারিবীয় ব্যাটিং মানেই তো ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা! সবকিছু নিজেদের অনুকূলে থাকার পরও তাই ‘ফেবারিট’ শব্দটার ওপর একক দাবি রাখেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আজকের আগে বাংলাদেশ ১১৬ ওয়ানডেতে জয় পেয়েছে। আজ জিতলে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ১১৭। তবে একটা দিক দিয়ে আজকের ম্যাচটা হতে পারে শুধুই মাশরাফির। ওয়ানডেতে নিজের ২০০ তম ম্যাচ খেলতে নামবেন আজ, বাংলাদেশের হয়ে যে রেকর্ড নেই আর কারও। জাতীয় দলের হয়ে কোনো একটি সংস্করণে ২০০ ম্যাচ খেলতে পারা মাশরাফির চোখেও একটা অর্জন। তবে রেকর্ডের এ রকম সংখ্যা কখনোই তাঁকে টানে না। ২০০ তম ম্যাচটা মাশরাফির কাছে তখনই বিশেষ কিছু হয়ে উঠবে, যখন তাতে জিতবে বাংলাদেশ।

ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, দলে পাঁচ পরিবর্তন

ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, দলে পাঁচ পরিবর্তন

মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
মিরপুরে বছরের শেষ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ। তিন পেসার ও চার ওপেনার নিয়ে মাঠে নেমেছে মাশরাফি বিন মুতর্জার দল। দলে মোট পাঁচটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। চোট কাটিয়ে ওয়ানডে দলে ফিরেছেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। চোটের জন্য এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ছিলেন না দুজন। সেই সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে বিশ্রাম পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজও ফিরেছেন ওয়ানডে দলে। এ ছাড়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের জায়গায় দলে ফিরেছেন পেসার রুবেল হোসেন। এই পাঁচজনকে জায়গা দিতে দল থেকে বাদ পড়েছেন আরিফুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, নাজমুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও আবু হায়দার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এর আগে টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সর্বশেষ তিনটি ওয়ানডে সিরিজের দুটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ।

প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), মোস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন।

Tuesday, December 4, 2018

র‍্যাব-পুলিশ ঢুকে দেখে কাফনে মোড়ানো শিশুর লাশ



র‍্যাব-পুলিশ ঢুকে দেখে কাফনে মোড়ানো শিশুর লাশ


রাজধানীর বাংলামোটরের লিংক রোডের খোদেজা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উল্টো দিকের ১৬ নম্বর বাড়ির ভেতরে ঢুকে এক শিশুর লাশ দেখতে পেয়েছে র‍্যাব ও পুলিশ। আজ বুধবার সকালে ওই বাসায় এক বাবা তাঁর দুই শিশুসন্তানকে ‘জিম্মি’ করে রেখেছেন—এমন সংবাদে বাসাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ। কিছুক্ষণ পরে র‍্যাব, পুলিশ, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যেরা বাড়িটি ঘিরে ফেলেন। পুলিশ ও র‍্যাব ভেতরে ঢুকে ওই শিশুর লাশ দেখতে পেয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে।
শিশুটির নাম নূর সাফায়েত। তাঁর বয়স আনুমানিক আড়াই বছর।
র‍্যাব-২–এর এসআই শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বাড়ির ভেতরে ঢুকেছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি শিশুটির বাবা বসে আছেন, তাঁর পাশে একজন হুজুর বসে আছেন। শিশুটিকে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো একটি টেবিলের ওপর রাখা হয়েছে। শিশুটির বাবাকে কোনো সাহায্য লাগবে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপনাদের কারও সাহায্য লাগবে না। আপনারা কেন এসেছেন? আপনারা চলে যান। বেলা একটার দিকে আমি নিজে আজিমপুর কবরস্থানে গিয়ে আমার ছেলেকে দাফন করব।”’

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘ওই বাসায় একটি শিশু মারা গেছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। শিশুটির বয়স আড়াই থেকে তিন বছর।’ তিনি জানান, শিশুর বাবা এর আগে মাদক গ্রহণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জেলেও পাঠানো হয়।
শিশুটির বাবার নাম নুরুজ্জামান কাজল। কাজলের বাবার নাম মনু মেম্বার। পরিবারের সদস্যেরা জানান, এলাকায় বেশ সুনাম রয়েছে মনু মেম্বারের পরিবারের। কাজলের আচার-আচরণের জন্য পরিবারের সদস্যরা তাঁর ওপর বিরক্ত ছিলেন।

স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ওই বাসার দোতলায় থাকতেন কাজল। পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, তাঁর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মাস খানেক আগে তাঁর স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।
স্থানীয় একজন বাসিন্দা আকিল জামান বলেন, কয়েক মাস আগে স্ত্রীকেও মারধর করেন কাজল। প্রতিবেশীরা এসে তাঁর স্ত্রীকে উদ্ধার করেন। নির্যাতন সইতে না পেরে স্ত্রী চলে গেছেন। বাচ্চা দুটো বাবার সঙ্গে ছিল।
ঘটনা শুনে নুরুজ্জামান কাজলের ভাই নুরুল হুদা উজ্জ্বল ঘটনাস্থলে এসেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে সাতটার দিকে কাজল বাসা থেকে বের হয়ে পাশে থাকা মাদ্রাসায় গিয়ে জানান, তাঁর ছোট ছেলে নূর সাফায়েত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। এটা যেন মাইকে ঘোষণা করা হয়। তারপর মাদ্রাসার ছাত্রদের পবিত্র কোরআন খতম দেওয়ার জন্য নিয়ে যেতে চান। এ কথা শোনার পর আবদুল গাফফার নামে একজন খাদেম মাদ্রাসা থেকে তাঁর সঙ্গে যান। এখনো তিনি ভেতরে আটকা আছেন। মাইকে সংবাদ শুনে আমি আসি। ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করি। কিন্তু কাজল ঢুকতে দেননি। দরজা আটকে দিয়েছেন। কাজলের সঙ্গে তাঁর বড় ছেলে সুরায়েত (৪) আছে।’

নুরুল হুদা উজ্জ্বল অভিযোগ করেন, তাঁর ভাই নুরুজ্জামান কাজল দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলেকে হত্যা করেছেন। তাঁর হাতে রামদা ছিল।
বাড়িটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও র‍্যাব। ছবি: আবদুস সালামবাড়িটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও র‍্যাব। ছবি: আবদুস সালাম

হতাশ গ্রিজম্যান


ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে কোর্টনি ওয়ালশের পরিকল্পনা

ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে কোর্টনি ওয়ালশের পরিকল্পনা
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ১৮ বছরে বাংলাদেশের খেলা ১১২টি টেস্ট ম্যাচের মধ্যে প্রথমবার রবিবার ঢাকা টেস্টে প্রতিপক্ষকে ফলোঅনের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে টাইগাররা। এদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের পর মিরপুর টেস্টে আরও ভয়ঙ্কর রূপে নিজেদের মেলে ধরে টাইগাররা।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৫০৮ রানের জবাবে মেহেদি হাসান মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১১১ রানেই অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে অবাক করে ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশ দলে একজনও পেসার ছিলেন না।
তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া ওয়ানডে সিরিজে পেসারদের আধিক্য থাকবে বলে জানিয়েছেন পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ। মাশরাফি বিন মর্তুজা অধিনায়ক হিসেবে থাকবেন। রুবেল হোসেন আছেন। আছেন মুস্তাফিজুর রহমানও।
এ ব্যাপারে সোমবার কোর্টনি ওয়ালশ বলেন, ‘মাশরাফি ও রুবেল ফিরছে। মুস্তাফিজ আছে। স্কোয়াডে যথেষ্ট পেসার আছে। তবে আমি জানি না কে কে খেলবে। এটা নির্ভর করবে উইকেটের উপর। আসলে আপনারা ম্যাচ ও সিরিজ জিততে চান। আমি মনে করি বাংলাদেশ যদি বেশি বেশি ম্যাচ জিতে তাহলে তরুণদের ক্রিকেটে আসার পথ আরও প্রসারিত হবে। সামনে আমাদের অনেক ম্যাচ আছে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে পেসাররা খেলবে। তরুণরা সেটা দেখবে। তারা ক্রিকেটের প্রতি আকৃষ্ট হবে। এটা আসলে একটা প্রোগ্রাম, যেটার মাধ্যমে আপনি তরুণদের উজ্জীবিত করতে পারবেন খেলতে। এটাকে কেবল একটি টেস্ট ম্যাচ যেটাতে কোনো পেসার খেলেনি সেটা দিয়ে বিচার করলে হবে না।’

আবারও তেজস্ক্রিয় পদার্থ শনাক্ত!



আবারও তেজস্ক্রিয় পদার্থ শনাক্ত!

.চট্টগ্রাম বন্দর
.তিন ধাপে পরীক্ষা করে লোহার পণ্যে তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতি নিশ্চিত হন বিজ্ঞানীরা। 
.চট্টগ্রাম বন্দরে এ পণ্য এনেছে কেএসআরএম গ্রুপ। 
.লোহার মধ্যে পাওয়া তেজস্ক্রিয় মৌলটি হলো ‘সিজিয়াম ১৩৭’ 
.সর্বোচ্চ মাত্রা পাওয়া গেছে প্রতি ঘণ্টায় ১ দশমিক ২৩ মাইক্রোসিভার্ট
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া পুরোনো লোহার পণ্যে আবারও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া গেছে। এই পুরোনো লোহা আনা হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলি থেকে। চট্টগ্রামের কেএসআরএম গ্রুপ এই লোহা আমদানি করেছে।তিন ধাপে পরীক্ষা করে কনটেইনারের ভেতরে তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
পরীক্ষা ও জরিপে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কনটেইনারে লোহার মধ্যে পাওয়া তেজস্ক্রিয় মৌলটি হলো ‘সিজিয়াম ১৩৭’। শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত হওয়া তেজস্ক্রিয় পদার্থ এটি। কনটেইনারের বাইরে থেকে পরীক্ষা করে এটির সর্বোচ্চ মাত্রা পাওয়া গেছে প্রতি ঘণ্টায় ১ দশমিক ২৩ মাইক্রোসিভার্ট (তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপের একক)। তেজস্ক্রিয় পদার্থটি কনটেইনার থেকে বের করা হয়নি। ফলে এটির প্রকৃত মাত্রা নিরূপণ করা যায়নি।
শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় পদার্থ হলো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষতিকর পদার্থ। এটি সরাসরি মানুষের সংস্পর্শে এলে বা গলিয়ে কোনো পণ্য প্রস্তুত করে ব্যবহার করা হলে মানবস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতো বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।  
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের ভ্যালেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এই পুরোনো লোহার টুকরা আমদানি করে চট্টগ্রামের কেএসআরএম গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কেএসআরএম বিলেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। তবে সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠানটি এই পুরোনো লোহা এনেছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলি থেকে। গত ২০ সেপ্টেম্বর চালানটি খালাস নেওয়ার সময় বন্দরের সিপিআর ফটকে মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের ‘রেডিয়েশন পোর্টাল মনিটর’ স্থাপনায় সংকেত বেজে ওঠে। এরপরই কনটেইনারটি আটক করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। একই চালানে আরও নয়টি কনটেইনার থাকলেও সেগুলোতে কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া যায়নি। কনটেইনারটি আটকের পর দ্বিতীয় ধাপে এটি পরীক্ষা করা হয়। ১০ নভেম্বর কনটেইনারটিতে তৃতীয় ধাপে জরিপ চালানো হয়। পরমাণু শক্তি কমিশনের ছয় সদস্যের একটি পরিদর্শক দল জরিপ করে কনটেইনারের ভেতর তেজস্ক্রিয় পদার্থের স্থানটি চিহ্নিত করে।
জানতে চাইলে পরিদর্শক দলের প্রধান বিজ্ঞানী খন্দকার আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তেজস্ক্রিয় পরিমাপের যন্ত্র জরিপ মিটার, কন্টামিনেশন মনিটরসহ কয়েকটি যন্ত্রের মাধ্যমে কনটেইনারের বাইরে থেকে এই জরিপ করা হয়। কনটেইনারের যে জায়গায় তেজস্ক্রিয় পদার্থ আছে, তা চিহ্নিত করার পর সেখানে স্টিকার সেঁটে দেওয়া হয়েছে।
পরিদর্শক দলের নেতৃত্ব দেওয়া খন্দকার আসাদুজ্জামান সাভারের ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির হেলথ ফিজিকস অ্যান্ড রেডিওঅ্যাকটিভ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। জরিপের সময় তাঁর সঙ্গে পরমাণু শক্তি কমিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল ইসলাম ভূঞাসহ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ইতিমধ্যে পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিশ্চিত হওয়ার পর এই কনটেইনারের গন্তব্য কী, জানতে চাইলে চট্টগ্রামে কাস্টমসের সহকারী কমিশনার (মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ) মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তৃতীয় ধাপের জরিপ করা হলেও জরিপের ফল এখনো হাতে পাওয়া যায়নি। ফলাফল পাওয়ার পর আমদানি পণ্যের চালানটি কি পুনঃ রপ্তানি হবে, না দূষণমুক্ত করা হবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এই কাঁচামাল কোনোভাবেই গ্রহণ করবেন না। কারণ, রপ্তানিকারক তেজস্ক্রিয়তামুক্ত পণ্য সরবরাহের অঙ্গীকার করেছেন।  
প্রথম তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া যায় ২০১৪ সালে
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রপ্তানি হওয়া কনটেইনারে প্রথম তেজস্ক্রিয় পদার্থ শনাক্ত হয় ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল।  এরপর ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট চীনে রপ্তানি হওয়ার সময় জিংক অক্সাইডের একটি চালানে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হয়।

শিল্পী হব, এমন স্বপ্ন ছিল না

শিল্পী হব, এমন স্বপ্ন ছিল না

এই বিভাগ আপনাদের। এখানে পাঠকের মুখোমুখি হচ্ছেন বিনোদনজগতের তারকারা। তাঁরা আপনাদের পাঠানো যেকোনো প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দিচ্ছেন। আজ এই বিভাগে হাজির হয়েছেন অভিনেতা আফরান নিশো
অধিকাংশ সময় আপনার অভিনীত চরিত্রগুলো হয় বাউণ্ডুলে ধরনের, বাস্তবে জীবনেও আপনি কি তেমনই বাউন্ডুলে?
প্রথম কথা, বেশির ভাগ সময়েই আমি এ ধরনের নাটক করি না। হয়তো যে কয়টি নাটকে আমার চরিত্র বাউণ্ডুলে, ঠিক ওই নাটকগুলোই দেখা হয়েছে আপনার। কারণ এ ধরনের নাটকগুলোই বেশি ভাইরাল হয়। বাস্তব জীবনে আমি মিশ্র। কখনো বাউণ্ডুলে কিংবা সময়ের সঙ্গে সময়ের নিয়মে মিশে যাই।

কখনো রোমান্টিক, কখনো বাউণ্ডুলে, আবার কখনো গোছানো গ্রাজুয়েট এক ছেলে—বৈচিত্র্যময় এই চরিত্রগুলো তুলে ধরতে মানসিক পরিশ্রম কেমন হয়?
এ সময়ে যাঁরা নানা ধরনের বৈচিত্র্যপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন, তাঁদের হয়তো মানসিক চাপ থাকতে পারে, কিন্তু আমার বেলায় এই মানসিক চাপ অনেক আগে ছিল। কাজ করতে করতে এখন আর চাপ মনে হয় না। এই চাপ সয়ে গেছে।

এবার কোটি টাকার প্রশ্ন—অভিনয় জীবনে এ পর্যন্ত কতটি নাটক/টেলিছবিতে অভিনয় করেছেন?
আমি তো গুনে রাখিনি। বলা খুব কঠিন। তবে কোটি টাকা দিলে হয়তো গুনে গুনে বলতে পারি। হা হা হা....। ৫০০–এর মতো হতে পারে।

অভিনয় জগতে আসতে কতটা সংগ্রাম করতে হয়েছে?
আমার কাছের মানুষেরা জানেন, আমার শুরুটা মডেলিং দিয়ে। পড়ালেখা করে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হব—একসময় এ ধরনের স্বপ্ন ছিল। নাট্যাভিনেতা বা একজন শিল্পী হব, এমন স্বপ্ন ছিল না। অনেককে হয়তো কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে, আমার সেই অর্থে হয়নি। আমি ভাগ্যবান। তবে এরপর নিজেকে একজন অভিনেতা হিসেবে তুলে ধরার জন্য, ওই চরিত্রে নিজেকে ফুটিয়ে তোলা কিংবা নিজেকে ভাঙা–গড়ার জন্য আমাকে সংগ্রাম করতে হয়েছে, হচ্ছে। একটা জায়গায় নিজেকে নিতে হলে সংগ্রাম করতেই হবে।

অভিনয়জীবনে নিজেকে কীভাবে তুলে ধরার ইচ্ছা ছিল?
সব সময়ই একজন অভিনেতা হিসেবে নিজেকে দেখতে চেয়েছি। অভিনয়জীবনে সাদামাটা থাকতে পছন্দ করি। এখনো পাড়ার গলির মুখে দাঁড়িয়ে দুই টাকার চা খাই। সরি, এখন চায়ের দাম পাঁচ টাকা হয়ে গেছে! হা হা হা... সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে পছন্দ করি। কারণ এতে করে বিভিন্ন ধরনের চরিত্র কাছ থেকে দেখা যায়, শেখা যায়। তথাকথিত হিরো হওয়ার ইচ্ছা ছিল না কোনো দিনই।

জাস্টিন বিবার বিয়ে করেছেন


জাস্টিন বিবার বিয়ে করেছেন
এর আগে জানা গিয়েছিল, বিয়ের কাজ অর্ধেক সেরে ফেলেছেন আলোচিত মার্কিন পপ গায়ক জাস্টিন বিবার। বাকিটা কবে করবেন, সে বিষয়ে তখনো মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছিলেন। তবে গত ১৩ সেপ্টেম্বর জাস্টিন বিবার আর হেইলি ব্যাল্ডউইন জুটিকে দেখা গেছে লস অ্যাঞ্জেলেসের ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অফিসে। সেখানে আলোকচিত্রীদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে যায় এই জুটি। ধারণা করা হচ্ছে, বিবাহ নিবন্ধন করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেখানে আবেগঘন কণ্ঠে বিবারকে বলতে শোনা গেছে, ‘বিয়ের জন্য আমার আর তর সইছে না বেবি।’ এমনকি ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অফিসের এক কর্মকর্তাকে কাজটি করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিবার। সেই সময় সংবাদমাধ্যমগুলো প্রশ্ন রেখেছিল, তবে কি জাস্টিন বিবার বিয়ে করেই ফেলেছেন?
এবার জানা গেল, জাস্টিন বিবার ও হেইলি ব্যাল্ডউইন এরই মধ্যে বিয়ে করেছেন। আর নিজের বিয়ের খবর স্বীকার করেছেন জাস্টিন বিবার। ইনস্টাগ্রামে হেইলি ব্যাল্ডউইনের সঙ্গে একটি ছবি দিয়ে জাস্টিন বিবার লিখেছেন, ‘আমার স্ত্রী সত্যিই দারুণ!’ আর হেইলি ব্যাল্ডউইনও নিজের নাম পাল্টেছেন। আজ শনিবার ইনস্টাগ্রামে দেখা যাচ্ছে, নিজের নাম পাল্টে তিনি লিখেছেন হেইলি বিবার।

এদিকে জাস্টিন বিবার আর হেইলি ব্যাল্ডউইনকে অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এই যেমন একজন ভক্ত লিখেছেন, ‘স্ত্রী! তুমি সত্যি বলছ?’ আরেকজন লিখেছেন, ‘ও মাই গড!, তোমরা বিবাহিত?’
এর আগে পিপল ম্যাগাজিনকে বিবার-ব্যাল্ডউইন জুটির এক নিকট আত্মীয় জানিয়েছেন, ‘কারও কথাই শুনল না ওরা।’ আর গির্জা সূত্রে জানা গেছে, তাঁরা দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করেছেন। তবে ধর্মীয় ও পারিবারিক আনুষ্ঠানিকতা এখনো বাকি আছে। এই দুই তারকার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, দুজনের কারও বিয়ের জন্য তর সইছিল না। তবে ধুমধাম করে নয়, বরং বন্ধু আর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছোটখাটো অনুষ্ঠান করবেন এ জুটি। জমকালো অনুষ্ঠান করে লোক দেখাতে চান না তাঁরা, শান্তিতে সংসার করতে চান।

এক সাক্ষাৎকারে হেইলি ব্যাল্ডউইন বলেন, ‘আমার বোন ২৪ বছর বয়সে বিয়ে করেছেন। আমাদের বাবা-মাও কম বয়সে বিয়ে করেছেন। সুতরাং আমি আর অপেক্ষা করার কোনো প্রয়োজন দেখি না। যখন মনে হবে, করতে হবে। ব্যস, করে ফেলতে হবে। সিদ্ধান্ত ভুল হলে তো তাঁরা আমাকে বাধা দিতেন। কিন্তু তাঁরা সেটা করেননি।’
গত ৭ জুলাই বাহামাসের এক রেস্তোরাঁয় নৈশভোজের সময় হেইলি ব্যাল্ডউইনকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় জাস্টিন বিবার। কেউ কল্পনাই করতে পারেনি, এত দ্রুত শুভ পরিণয়ের দিকে যাচ্ছেন এই জুটি।

যে ছবির টাকায় হবে পথশিশুদের স্কুল

যে ছবির টাকায় হবে পথশিশুদের স্কুল

‘পাঠশালা’ শুধুই শিশুতোষ ছবি নয়। ভালো গল্পের একটি বিনোদনমূলক ছবি নির্মাণ করতে চেয়েছেন ছবির দুই পরিচালক ফয়সাল রদ্দি ও আসিফ ইসলাম। এমনকি কেবল বিনোদন জোগাতেই এ ছবি তৈরি করেননি তাঁরা। স্বপ্নচারী এক পথশিশুর গল্প ঘিরে নির্মিত এ ছবির টাকায় পথশিশুদের জন্য করা হবে স্কুল।
গত শুক্রবার ঢাকার দুটি সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পায় শিশুতোষ ছবি ‘পাঠশালা’। এ ছবির মধ্য দিয়ে অনেক বছর পর বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে যুক্ত হলো আরও একটি শিশুতোষ ছবি।
আজ সোমবার বিকেলে প্রথম আলো কার্যালয়ে ছবিটি নিয়ে নিজেদের স্বপ্ন, ভাবনা ও নানা সম্ভাবনার কথা বলেন তরুণ দুই পরিচালক। ফয়সাল রদ্দি বলেন, ‘কোনো শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা আমাদের ছিল না। ইচ্ছে ছিল একটা ভালো গল্পের ছবি বানাব। কাকতালীয়ভাবে এ গল্পটি আমাদের ভালো লেগে যায়। ইচ্ছে আছে, পথশিশুদের নিয়ে ছবিটি দেখব।’
বড় পর্দায় নিজেদের প্রথম ছবি দেখে আবেগাপ্লুত এ দুই তরুণ। প্রদর্শনীতে নানা বয়সী মানুষ, বিশেষ করে শিশুদের প্রতিক্রিয়া ভীষণ অনুপ্রাণিত করেছে তাঁদের। আসিফ ইসলাম বলেন, ‘অথচ ছবির গল্প জানার পর অনেকে বলেছিলেন, এমন ছবি দিয়ে নির্মাতা হিসেবে যাত্রা শুরু করা হবে পাগলামি। আগে বাণিজ্যিক ছবি বানিয়ে কিছু টাকা জমাও। সেই টাকা দিয়ে পরে শিশুতোষ ছবি বানিয়ো। আমাদের মনে হলো পাগলামিটাই আগে করি।’
‘পাঠশালা’ ছবিটির স্লোগান, ‘সব মানিকের জন্য স্কুল চাই’। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে চলচ্চিত্রটির প্রচারণা ও প্রদর্শনীর পরিকল্পনা করা হয়েছে। টিকিট বিক্রি থেকে পাওয়া ১০ শতাংশ অর্থ ব্যয় হবে পথশিশুদের স্কুল তৈরির কাজে। পরিচালকেরা মনে করেন, ছবিটি দেখে পথশিশুদের স্কুল করায় অবদান রাখতে পারবেন দর্শকেরা।
তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘পাঠশালা’ ছবির পরিচালক দুজন কেন? তাঁরা বলেন, গাড়ির মেরামতশালায় কাজ করলেও ছবির মানিকের মন পড়ে থাকত পাঠশালায়। একইভাবে, ফরমায়েশি কাজ করলেও আমাদের মন পড়ে থাকত সিনেমার দিকে। স্বপ্ন ছিল নিজেরা একদিন চমৎকার সব ছবি বানাব।’ অবশেষে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে পর্দা আলো করল দুই পরিচালকের ছবিটি।
শুরুতে শুধু ঢাকার দুটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলেও, পরে আরও বেশ কিছু প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হবে ‘পাঠশালা’। মুক্তির প্রথম চার দিন দর্শক তুলনামূলক কম থাকলেও স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে দর্শক বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন পরিচালকেরা।
‘পাঠশালা’ সিনেমার গল্পে দেখানো হয় মানিক নামের এক মেধাবী শিশুর গল্প। জীবিকার তাগিদে স্কুল ছেড়ে তাকে চলে আসতে হয় ঢাকায়। কাজ নিতে হয় একটি গাড়ি মেরামতশালায়। এই সংগ্রামী জীবনের মধ্যে দিয়েও সে স্কুলে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখে।
ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন হাবিব আরিন্দা ও ইমা আক্তার। অন্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাজমুল হুসেইন, ফারহানা মিঠু, রুমি হুদা, গাজী ফারুক, তৌফিকুল ইমন, আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।
ইতিমধ্যে জার্মানির সানলাইট ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, কানাডার কিডস ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এবং ভারতের লিফট ইন্ডিয়া ও পুনেতে প্রদর্শিত হয়েছে ছবিটি।

বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় ইতিহাস গড়েছেন ঐশী



বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় ইতিহাস গড়েছেন ঐশী

‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতার ফেসবুক পেজে আজ সোমবার সকালে একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতার ইতিহাসে বাংলাদেশ এবার ইতিহাস গড়েছে। আর তা সম্ভব হয়েছে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ ঐশীর মাধ্যমেই। সেই পোস্টে জানানো হয়েছে, হেড টু হেড চ্যালেঞ্জে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ভিউ এবং ২০ মিলিয়ন মানুষের ভোট নেওয়া হয়েছে। ২০ জন প্রতিযোগীর প্রত্যেকে ৯০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে বিচারকদের জানিয়েছেন তাঁদের স্বপ্ন আর ইচ্ছার কথা। ঐশীর স্বপ্ন আর ইচ্ছার কথা শুনে বিচারকেরা মুগ্ধ হন। তাঁর মেধা আর সৌন্দর্যের ব্যাপারে তিন বিচারক একমত হন। তাঁদের মতে, সেরা ত্রিশে লড়াই করার মতো সব যোগ্যতা আছে ঐশীর।
বিচারকদের প্রশংসায় অভিভূত ঐশী। দ্বিগুণ উৎসাহ আর অনুপ্রেরণায় এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশের মতো একটি দেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে গর্বিত ঐশী। বললেন, ‘আমার দেশের ইতিহাস আমাকে গর্বিত করে। সেই দেশের একজন শুভেচ্ছাদূত হিসেবে বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতার মঞ্চে আমিও লড়ছি। পরপর দুবার বাংলাদেশ বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে। আর প্রথমবারের মতো সেরা ত্রিশে জায়গা করে নিয়েছে। বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজক কর্তৃপক্ষ যখন জানাল, সেরা ত্রিশে আমার জায়গা হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ইতিহাসে ঢুকে গেছে, এর চেয়ে গর্বের আর কী হতে পারে! আমি অভিভূত। উচ্ছ্বসিত। আনন্দিত।’

পিরোজপুরের মাটিভাঙ্গা এলাকার মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসী ঐশী। এইচএসসি পাস করেছেন মাথাভাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এসেছিলেন ঢাকায়। ভর্তি কোচিং করার সময়ই দেখেন ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতার বিজ্ঞাপন। নাম লেখান প্রতিযোগিতায়। নানা ধাপ পেরিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বরের গ্র্যান্ড ফিনালেতে চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। ঢাকার বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারের রাজদর্শন মিলনায়তনে বসেছিল ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৮’-এর গ্র্যান্ড ফিনালে। অন্তর শোবিজের আয়োজনে সেদিন সেরা ১০ সুন্দরীর মধ্য থেকে ঐশীকে সেরা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। এরপর তিনি বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে যান। মেধা আর সৌন্দর্যের এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়ায় কৃতজ্ঞ ঐশী। তখন তিনি জানান, ‘আগামী দিনগুলোয় আমি অর্টিজম নিয়ে কাজ করতে চাই।’

‘হেড টু হেড চ্যালেঞ্জ’ পর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার ৬৮তম আসরে সেরাদের তালিকায় এখন বাংলাদেশের ঐশী। বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীদের হারিয়ে সেরা ৩০ জনের মধ্যে এখন তাঁর অবস্থান। এর মধ্যে ‘হেড টু হেড চ্যালেঞ্জ’ বিভাগের ২০টি গ্রুপের বিজয়ীরা পৌঁছে গেছেন ফাইনাল রাউন্ডে।

এদিকে সেরাদের দৌড়ে জায়গা করে নেওয়ায় ভীষণ উচ্ছ্বসিত ঐশী। তিনি বলেন, ‘আমি অনেক খুশি। বাংলাদেশের শুভাকাঙ্ক্ষী আর বন্ধুদের প্রতি আমার ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা। আপনারা আমাকে সমর্থন করে ভোট দিয়েছেন। আপনাদের ভোটের কারণে আমি এত দূর আসতে পেরেছি। ভালোবেসে পাশে আছেন, ভবিষ্যতেও আপনাদের পাশে পাব। আপনাদের সবার ভালোবাসা ও সমর্থন নিয়ে অনেক দূর এগোতে চাই।’

‘হেড টু হেড চ্যালেঞ্জ’ বিভাগের পছন্দের প্রতিযোগীকে ভোট প্রদানের পদ্ধতি ছিল চার ধরনের। এগুলো হলো প্রতিটি দেশের মিস ওয়ার্ল্ড অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লাইক সংখ্যা, মিস ওয়ার্ল্ড ওয়েবসাইটে কনটেস্ট্যান্ট অপশনে গিয়ে ভোট প্রদান, অফিশিয়াল মবস্টার অ্যাকাউন্টে প্রতিযোগীদের ছবিতে লাইক দেওয়া ও কমেন্ট করা এবং মডেল পাওয়ার লাইভে নির্দিষ্ট লিংকে ক্লিক করে পছন্দের প্রতিযোগীকে লাইক দেওয়া।

এদিকে মিস ওয়ার্ল্ড ট্যালেন্ট ফাইনালে অস্ট্রিয়া, মিসর, রুয়ান্ডা, চিলি ও জাম্বিয়ার প্রতিযোগীদের পাশাপাশি নৃত্য পরিবেশন করে বিচারকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন ঐশী। ৮ ডিসেম্বর চীনের সানাইয়া শহরে অনুষ্ঠিত হবে ‘মিস ওয়ার্ল্ড ২০১৮ ’-এর জমকালো গ্র্যান্ড ফিনালে। সেখানেই ঘোষণা করা হবে বিশ্বের সেরা সুন্দরীর নাম। এবার বিশ্ব সুন্দরীকে মুকুট পরিয়ে দেবেন গত আসরের ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ ভারতের মানুষি ছিল্লার। জানা গেছে, গ্র্যান্ড ফিনালে শেষে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় ফিরবেন ঐশী।

কলকাতায় গাইলেন শুভ্রদেব

কলকাতায় গাইলেন শুভ্রদেব

বরেণ্য শিল্পী কিশোর কুমারের গান ভীষণ পছন্দ করেন শুভ্রদেব। তাঁর তারুণ্যের স্মৃতি জড়িয়ে আছে ওই শিল্পীর বেশ কিছু গানের সঙ্গে। সে রকম কিছু গান নিয়ে একটি অ্যালবাম করার কথা ভাবছেন অনেক দিন ধরে। সেই অ্যালবামের একটি গান তিনি গাইলেন কলকাতার আইসিসিআর মিলনায়তনে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতার আইসিসিআর মিলনায়তনে স্থানীয় এক সংগঠনের আমন্ত্রণে গান করতে যান বাংলাদেশের শিল্পী শুভ্রদেব। পেট ওয়েলনেস সোসাইটির আয়োজনে ওই সংগীতসন্ধ্যায় তিনি গেয়ে শোনান কিশোর কুমারের ‘আজ এই দিনটাকে’ আর নিজের ‘চণ্ডীদাস-রজকিনী’ গান দুটি। ওই অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা জানানো হয় শুভ্রদেবকে। তাঁর হাতে সংবর্ধনা স্মারক তুলে দেন কলকাতার শিল্পী শিলাজিৎ।
ওই সংগীতসন্ধ্যায় আরও গান করেছেন পূর্ণদাস বাউল, শিলাজিৎ, বিনোদ রাঠোর, পাপিয়া অধিকারী, সুদেব দে, রাজনন্দিনী দত্ত এবং গানের দল জেনিথ বয়েজ। কলকাতা থেকে শুভ্রদেব জানান, এটা সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত শিল্পীদের দেওয়া একটি সম্মাননা। বিনোদন অঙ্গনের যে মানুষেরা বৃক্ষ ও প্রাণীদের জন্য কাজ করে, তাদের সম্মানিত করার এ উদ্যোগ নেন অভিনেত্রী ও গায়িকা মৌসুমী দাস।

দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা গানের জনপ্রিয় শিল্পী হিসেবে সমাদৃত শুভ্রদেব। সংগীতের জন্য এ বছর ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ও গত বছর মাদার তেরেসা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনি। শিল্পী জানান, আগামী বছরের মার্চ নাগাদ তাঁর নতুন অ্যালবাম মুক্তি পাবে। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও সিডি আকারে অবমুক্ত হবে সেটি।

গানের মানুষ, প্রাণের মানুষ



গানের মানুষ, প্রাণের মানুষ

গানের বন্ধুকে গান দিয়েই শ্রদ্ধাঞ্জলি। গান গেয়েই স্মরণ করা হলো গানের মানুষ আইয়ুব বাচ্চুকে। এর চেয়ে যথার্থ আর কী হতে পারে!
আইয়ুব বাচ্চু জীবৎকালে যাঁদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছিলেন, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তাঁদের কণ্ঠে, বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজে সরব ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা ভবনের পরিবেশ। শুধু নীরব উপস্থিতি ছিল আইয়ুব বাচ্চুর। সশরীরে নয়, ছবিতে। অনুষ্ঠানের শুরুতে যন্ত্রে ধরে রাখা আইয়ুব বাচ্চুর স্বর শোনা গেল, ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো, অনেক কথায় মুখর আমায় দেখো...।’
বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস অ্যাসোসিয়েশন (বামবা) আয়োজন করেছিল ‘ফেয়ারওয়েল ট্রিবিউট টু আইয়ুব বাচ্চু’। শোকসভা নয়, সঞ্চালক মাকসুদ শুরুতে পরিষ্কার করে বললেন, ‘আমরা চাই বাচ্চুর জীবনকে সেলিব্রেট করতে, যেমন উচ্ছল, প্রাণবন্ত ছিল ও।’
সারা জীবন অগণিত মানুষের করতালি আদায় করা মানুষটির স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানটির পুরো পরিবেশ মুহুর্মুহু করতালিতে মুখর ছিল। সংক্ষিপ্ত আলোচনায় সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, সব সময় প্রাণোচ্ছল এই শিল্পী অনেক বড় মাপের একজন মানুষ ছিলেন। সহজেই সবাইকে আপন করে নেওয়ার মতো গুণ ছিল তাঁর।
১৯৮৭ সালের বামবার একটি কনসার্টের স্মৃতিচারণা করেন বর্তমান সভাপতি হামিন আহমেদ। কনসার্ট চলাকালে যান্ত্রিক গোলযোগে আয়োজনটি ভন্ডুল হতে চলেছিল। তখন সোলসের সদস্য আইয়ুব বাচ্চু গান গেয়ে, বাজিয়ে একাই পুরো ঘটনা আয়ত্তে নিয়ে আসেন। স্মরণ করতে এসে আধুনিক গানের শিল্পী রফিকুল আলম তাঁর গাওয়া আইয়ুব বাচ্চুর সংগীতায়োজনে করা ‘স্বাধীনতা তুমি নয় মাস পর দেখা খোলা আকাশ’ গানটির কয়েকটি লাইন শোনান। ফিডব্যাকের ফুয়াদ নাসের বলেন, তাঁর মতো বন্ধুবৎসল মানুষ খুঁজে পাওয়াটা দুষ্কর। মা-ভক্ত আইয়ুব বাচ্চুকে স্মরণ করে বাপ্পা মজুমদার বলেন, ‘তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখেছি, যেমন শিখেছি মাকে আরও বেশি ভালোবাসতে।’
অনুষ্ঠানে আইয়ুব বাচ্চুর ১৫টি গান গেয়ে শোনান বামবার সদস্যরা। এগুলোর মধ্যে ছিল ‘এখন অনেক রাত’, ‘রাতের তারার মতো’, ‘চাঁদ মামা’, ‘ফেরারি মন’, ‘গতকাল রাতে’, ‘কেউ সুখী নয়’, ‘ময়না’, ‘রুপালি গিটার’, ‘হাসতে দেখো’, ‘বাংলাদেশ’ ইত্যাদি। শেষে সবাই মিলে করেন, ‘চলো বদলে যাই’ গানটি।
বরাবরই আইয়ুব বাচ্চু চেয়েছিলেন, দেশের সব ব্যান্ড এক প্ল্যাটফর্মে এসে গান করবে। তাঁর সেই চাওয়া পূরণ হলো গতকাল রাতে। নির্দিষ্ট কোনো ব্যান্ড নয়, বরং শিল্পীরা মিলেমিশে একাকার হয়ে গান করেন। বিষয়টিকে উল্লেখ করে শাফিন আহমেদ বলেন, ‘সংগীতাঙ্গনে সবাইকে যে একত্র করা যায়, আইয়ুব বাচ্চু সেটি করে দেখিয়েছেন।’
গতকাল সবাই যখন তাঁর গানগুলো গাইছিলেন, তখন আইয়ুব বাচ্চু অনতিক্রমণীয় দূরত্বে। তিনি কি দেখছিলেন, ছেড়ে যাওয়া সঙ্গীরা কী গভীর শ্রদ্ধা ও নিখাদ ভালোবাসায় মনে রেখেছেন তাঁকে? এ প্রশ্নের উত্তর কারও জানা নেই। তবে বলা যায়, দেহান্তর মানেই কারও কারও ক্ষেত্রে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া নয়। তাঁর সৃষ্টি ও কাজ কালোত্তীর্ণ হয়ে ওঠে। মৃত্যুকে জয় করার উপায় না থাকলেও মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে ওঠেন কেউ কেউ। রুপালি গিটার ফেলে আইয়ুব বাচ্চু সে পথেই এগিয়েছেন।